অন্যান্য কবিতা কবিতা

মহাভারতের আধুনিক পুনর্জন্ম

মহাভারতের আধুনিক পুনর্জন্ম
রুপন নাথ

সময়ের স্রোতে ইতিহাস বদলায়,
তবু চরিত্রের পালা বদলায় না!
আজও কৌরবেরা দখলকাতর,
আজও শকুনির ছক একই রকম!

অরুণাচল দখলের মতোই,
হস্তিনাপুরেও পাপের বর্ষণ,
শান্তিচুক্তির নামে প্রতারণার কূটকৌশল,
ইন্দ্রপ্রস্থে ছড়ানো বিষাক্ত বিভ্রান্তি।

শ্লোগান আজও সেই পুরোনো—
“ইয়ে ইন্দ্রপ্রস্থ হামারা হ্যায়, ইয়ে ইন্দ্রপ্রস্থ হামকো চাহিয়ে!”
পাকনৈতিক কৌরবদের একটাই স্বপ্ন,
পাণ্ডবদের রাজ্য গ্রাস করবে একদিন!

কৃষ্ণ, আধুনিক আমেরিকা—
দ্বারকাবাসী বলে আজও নিরপেক্ষ,
শান্তির দূত হয়ে দেন পরামর্শ,
কিন্তু পরামর্শে তো যুদ্ধ থামে না!

শকুনির চোখে লালসার আগুন,
সে তো চায় কেবল আগুন লাগাতে,
চুক্তির নামে প্রতারণার নকশা এঁকে,
দুর্যোধনের কানে ফিসফিসিয়ে যায়!

যুদ্ধ এসে উপস্থিত—
ইন্দ্রপ্রস্থ আর হস্তিনাপুরের মাঝে,
অর্জুন টেলিগ্রাম পাঠায় কৃষ্ণকে—
“হে মাধব! অস্ত্র চাই, যুদ্ধ যে আসন্ন!”

দুর্যোধন আগে থেকেই প্রস্তুত,
সরাসরি কৃষ্ণকে চেপে ধরে—
“বলো বাসুদেব, অস্ত্র দেবে তো? না হলে আমাদের হয়ে লড়ো!”
কৃষ্ণ হেসে বলেন—
“ভায়া পার্থ-দুর্যো, সময় খারাপ, অস্ত্র দিতে পারবো না!
তবে চাইলে বুদ্ধি দিতে পারি!”

শকুনি বিষধর সর্পের মতো ফোঁস ফোঁস করে—
“বুদ্ধি দিয়ে কি হবে? দরকার তো অস্ত্র!”
দুর্যোধন গর্জে ওঠে—
“না বাসুদেব, বুদ্ধির দরকার নেই! বুদ্ধিধারী মামা আছেনই!”

অর্জুন কেবল একটাই কথা বলে—
“আমি চাই না পারমাণবিক বোমা, চাই না AK-47,
শুধু আপনি থাকুন আমার পাশে, তাহলেই হবে!”

কৃষ্ণ শেষমেষ পাণ্ডবদের পক্ষে,
শুরু হলো ইতিহাসের ভয়ংকরতম যুদ্ধ,
দুর্যোধন জোট বাঁধলো,
শকুনির ছায়ায় বড় বড় মহারথীদের সাথে!

হস্তিনাপুরের যুদ্ধে অস্ত্রধারীরা হিমশিম—
কোথাও কাবুলের ট্রেনার, কোথাও গোর্খা লার্নার!
সবাই দুর্যোধনের দলে অস্ত্রের বাহার সাজালো,
অন্যদিকে অর্জুনের সেনা মাত্র কয়েকজন!

পুরনো গদা হাতে ভীম
যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে পারলো কই?
কোথায় পরমাণু? কোথায় যুদ্ধাস্ত্র?
কেবল কৃষ্ণের লীলা…
এক এক করে অকেজো হয়ে গেলো
শত্রুপক্ষের সব ভয়ংকর অস্ত্র!

বন্দুকের গুলি তলোয়ারে আটকে গেল,
যুদ্ধ রমরমিয়ে চলতে লাগলো,
ভীষ্ম অমরত্বের অহংকারে এগিয়ে এলো,
কিন্তু কৃষ্ণের লীলায়…
শিখণ্ডীর সামনে অবশ হয়ে গেলো সে!

শেষমেষ পরাজিত হলো কৌরববাহিনী,
শ্রীকৃষ্ণের কৌশলে বিজয় নিশ্চিত হলো!
অর্জুন যে শত্রুকেও বন্ধু ভাবে,
সৌভাগ্য যে কৃষ্ণ ছিলেন তার পাশে!

যুদ্ধের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে রইলো শুধু দুর্যোধন,
শরীরে লোহার মতো কঠিন বল,
কিন্তু কৃষ্ণের এক লীলায় ধুলোয় মিশে গেলো অহংকার!

এ যুদ্ধ কি শেষ?
না! সময়ের স্রোতে যুদ্ধ চলেই যাবে,
তবে ইতিহাস সাক্ষী…
অন্তিমে জয় হবেই ধর্মের!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *