রাত গভীর হয়েছে। রাহুল ও সীমন্তিকা বসে আছে বিশাল অন্ধকার ড্রয়িংরুমে। টেবিলের ওপরে এলোমেলোভাবে ছড়িয়ে আছে নানারকম নথি, ছবি, চিঠি এবং নোট। এতদিনের সমস্ত তদন্তের উপসংহার টানার সময় এসে গেছে।
রাহুল ও সীমন্তিকা যখন সমস্ত তথ্য জড়ো করেছিল, তখনই তারা বুঝতে পারছিল যে খুনটি ছিল আসলে একটি ভুল পরিকল্পনার পরিণাম। রূপালির মৃত্যু হওয়ার কথা ছিল না—আসল লক্ষ্য ছিল অপু।
তদন্তের মাধ্যমে উঠে আসে:
অপুর মা কখনোই এই বিয়েতে রাজি ছিলেন না এবং তিনি রূপালিকে সহ্য করতে পারতেন না। তিনি সবসময় চাইতেন অপু এমন একজনকে বিয়ে করুক, যে তার আজ্ঞাবহ থাকবে।
আর্য, অপুর জ্যাঠার ছেলে, সম্পত্তির জন্য তাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। অপু মারা গেলে সম্পত্তির উত্তরাধিকার হিসেবে সে সব পেয়ে যেত।
দীপু, যে রূপালির ঘনিষ্ঠ বান্ধবী ছিল, কিন্তু গোপনে অপুকে ভালোবাসত, সে প্রতিশোধের জন্য কোনো চরম পদক্ষেপ নিতে পারে।
বিবেক, যে রূপালিকে ভালোবাসত, কিন্তু সে কখনোই তাকে পছন্দ করত না, হয়তো এই ঘটনার পেছনে থাকতে পারে।
রাহুল ও সীমন্তিকা একে একে সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে শুরু করে। একসময় তারা বুঝতে পারে, খুনের পেছনে একাধিক ষড়যন্ত্র জড়িয়ে আছে।
রাতের খাবারে বিষ: খুনির আসল পরিকল্পনা ছিল অপুর খাবারে বিষ মেশানো, কিন্তু ভুলবশত সেই খাবার খেয়ে ফেলে রূপালি।
বাতি নিভে যাওয়ার পরিকল্পনা: লাইট যেদিন চলে গিয়েছিল, সেটি ছিল একটি পূর্বপরিকল্পিত ব্যবস্থা, যাতে কেউ দেখতে না পায় যে আসল শিকার কে।
টেনে আনার চিহ্ন: রূপালির দেহ পাওয়া যায় এমন জায়গায়, যেখানে সে মারা যায়নি। অর্থাৎ, খুনের পরে তাকে সরানো হয়েছিল, যাতে তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করা যায়।
রাহুল ও সীমন্তিকা সন্দেহভাজনদের একত্রিত করে এবং ধীরে ধীরে সত্য উন্মোচন করতে থাকে।
আসল খুনি আর্য: সে পরিকল্পনা করেছিল অপুকে মারার, কারণ সম্পত্তির দলিল অপুর নামে ছিল।
সহযোগী অপুর মা: যদিও তিনি সরাসরি খুন করেননি, তবে তিনি রূপালির প্রতি অত্যাচার করতেন এবং এই বিয়েকে মেনে নিতে পারেননি।
খুনের ভুল লক্ষ্য: খাবারে ভুল করে রূপালি খেয়ে ফেলায় সে মৃত্যুবরণ করে।
যখন সত্য উন্মোচিত হচ্ছে, ঠিক তখনই আরেকটি খুন ঘটে! বাড়ির পুরনো পরিচারিকা, যে কিছু গোপন কথা জানত, তাকে কেউ শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। রাহুল সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে পারে, খুনি এখনো ধরা পড়েনি।
তারা তদন্ত চালিয়ে জানতে পারে, দীপু এই খুনটি করেছে, কারণ সে জানত, পরিচারিকা সত্য উদঘাটন করে ফেলবে।
শেষ পর্যন্ত পুলিশ এসে আর্য ও দীপুকে গ্রেফতার করে।
অপুর মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং নিজেকে দোষী মনে করেন।
অপু একসময় বাড়ি ছেড়ে চলে যায়, আর এই ঘটনার পর সীমন্তিকা ও রাহুল আরও অনেক কেস নিয়ে কাজ করতে থাকে।
তবে এই বাড়ির ইতিহাস থেকে যায় এক রহস্যময় স্মৃতি হয়ে…