গল্প রহস্যজনক গল্প

অন্ধকারের পর্দা (পর্ব 2)

রূপালির মৃত্যুতে গোটা পরিবারে যেন শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিয়ের রাতেই এমন এক মর্মান্তিক ঘটনা, কেউই যেন বিশ্বাস করতে পারছে না। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে, কিন্তু স্পষ্ট কোনো ক্লু নেই।

রূপালির দেহ নিয়ে যখন কান্নাকাটি চলছে, তখনই তার বাপের বাড়িতে থাকা বড় ভাই স্যৌমজোতি, ডাকনাম সৌম্য, কঠোর গলায় বলে ওঠে,

— “এটা কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা নয়। কেউ ওকে হত্যা করেছে।”

পরিবারের সবাই হতভম্ব হয়ে তাকায়।

— “কিন্তু কীভাবে? কেউ কিছু টেরই পেল না,” এক আত্মীয় বলে ওঠে।

— “আমি জানি না কীভাবে, কিন্তু এটা খুন। আর আমি সত্যিটা বের করবই।”

সকলের সাথে তার মত বিরোধ দেখা দিলেও কোন পরোয়া না করে সেই রাতে সৌম্য তার ছোট ভাই রাহুলের সঙ্গে যোগাযোগ করে।

রাহুলকে তো আপনারা সকলেই চিনে গেছেন এতদিনে। তার সাথে তার গার্লফ্রেন্ড সীমন্তিকাকে।

পরেরদিন সকালে রাহুল আর সীমন্তিকা এসে পৌঁছায়। বাড়ির পরিবেশ থমথমে। রাহুল সোজা গিয়ে সৌম্যর সঙ্গে দেখা করে।

— “আমাকে সব খুলে বলো,” রাহুল গম্ভীর স্বরে বলে।

সৌম্য দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

— “রূপালি ছোটবেলা থেকেই একটু সংবেদনশীল ছিল। কিন্তু ওর কোনো শত্রু ছিল বলে মনে হয় না। বিয়ের সময়ও সব স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু লাইট যাওয়ার পর কী হয়েছিল, সেটা কেউ বলতে পারছে না।”

রাহুল চোখ বন্ধ করে কিছু ভাবতে থাকে। সীমন্তিকা বাড়ির আশেপাশে ঘুরে দেখতে থাকে, কোনো সন্দেহজনক কিছু খুঁজে পাওয়ার আশায়।

রাতে রাহুল আর সীমন্তিকা তদন্ত চালিয়ে যেতে থাকে। ঠিক তখনই একটি আতঙ্কজনক ঘটনা ঘটে।

বাড়ির এক দেহরক্ষী আচমকা চিৎকার করে ওঠে। সবাই ছুটে গিয়ে দেখে, সে নিথর হয়ে পড়ে আছে—গলায় গভীর ক্ষত, আর চারপাশে ছড়িয়ে আছে আতঙ্কের চিহ্ন।

— “এবার বোঝা যাচ্ছে, কেউ এই রহস্য আড়াল করতে চাইছে,” রাহুল চাপা স্বরে বলে।

সন্দেহের তালিকায় ধীরে ধীরে উঠে আসে দুইজনের নাম—একজন এই পরিবারের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত কর্মচারী এবং আরেকজন এক আত্মীয়, যে বরাবরই কিছু লুকানোর চেষ্টা করছিল।

রাত গভীর হয়, কিন্তু রহস্য যেন আরও ঘনীভূত হতে থাকে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *