অন্ধকারের উৎসব
রুপন নাথ
আঁধার নামলো, ঘনালো ঘোর তমসা,
আহা! আজ রাত্রি হাসবে, নর-পিশাচের প্রতিশ্রুতি বসা।
রাতটা একটু বাড়ুক—
চাঁদের ছায়ায় ফিসফিসিয়ে ডাকবে হিংস্র কণ্ঠস্বর,
শিকারের অপেক্ষায় নিঃশ্বাস ফেলবে অন্ধকার।
আজই ছিনিয়ে নেবো তার রূপ-রস-যৌবন,
চূর্ণ হবে সে, করবো গ্রাস, মিটবে লোভ-তৃষ্ণার অনল!
জিঘাংসার নেশায় উঠবে মাতাল,
শুধু সুখের আস্বাদ নেবে তারার আলোয় বিভোর রক্তচোষা দানব।
রাত গভীর হলে পথ চলবে সে, একা…
তাকিয়ে দেখো!
ভয় তার চোখে—
তবুও পুরুষ জাতি তো প্রহর গোনে,
অভিসন্ধির নেশায় পথে থাকে শিকার ধরার তাগিদে!
আয়, বস্ত্র সরিয়ে রাখ,
লজ্জা কি এখানে মূল্য পাবে?
শুধু শরীরের লেনদেন, শারীরিক মীমাংসা।
কি বা হবে?
প্রেম এখানে অজুহাত,
ভালোবাসা তো আজ ক্ষণস্থায়ী—
কাল সকালে পথ বদলাবে সবাই!
ভয় নেই—
প্রশাসন গভীর ঘুমে বিভোর,
বিচারহীনতার বৃত্তে লুকিয়ে আছে শাসকের মুখোশ!
নেতাদের কিনেছি, দাদাদের হাতে শক্তি,
আমাদের রুখবে কে?
কেশ করবি?
আমরা কি শুধুই ধর্ষক?
দেখে নিস, প্রয়োজনে খুনও করবো!
শুধু শরীরই তো লুটেছি,
কেলাবো নাকি রাস্তার মাঝে?
ধর্ষণ তো আজ রীতি,
সমাজের নিস্তব্ধতার অভিশাপ!
মোমবাতি জ্বালাবি? মিছিল করবি?
তারপর?
আবার নিস্তব্ধতা, আবার ঘুম…
মৃত্যুর ভয় দেখাস?
খুন তো হতেই থাকে!
ধর্ষণই বা তাতে কতটা ব্যতিক্রম?
চল না, একটু আনন্দ লুটে নিই!
পুলিশ?
সেও তো পয়সার দাসত্বে রজনীগন্ধার ঘ্রাণে বিভোর!
মিছিল-মিটিং?
তাতে কি?
দেখ না চেয়ে,
এখানে সবাই প্রতিশোধ চায় মনে মনে,
শুধু দেখা দেখি— কে আগে হাঁটবে মৃত্যুর পথে?
নেতাদের কিনেছি,
দাদাদের বেচেছি,
এম.এল.এ. হয়েছি,
ইজ্জত?— সে তো টাকায় বিক্রি হয়!
নারীর লজ্জা কিনতে পারবো না, তাই কি?
সমাজ তো অন্ধ,
দেশ তো বিক্রি হয়ে গেছে!
ধর্ষণের ব্যঙ্গচিত্রে হাসছে সভ্যতার মুখোশ,
বিদেশী চোখে লজ্জিত ভারতমাতা।
নারী কাঁদছে?
দেশ কি সত্যিই ব্যথিত?
বিচারহীনতার এ অরণ্যে—
ধর্ষকেরই কি আসলে দোষ?
আইনের চোখে তো সে নির্দোষ!