অন্যান্য কবিতা কবিতা

পুজোর শহরে এক আঁধারের গল্প

পুজোর শহরে এক আঁধারের গল্প
রুপন নাথ

পরশীরা সব উৎসবে মেতে,
কাঁদছে মেয়েটা নিঃসঙ্গ ঘরে।
জিজ্ঞেস করবে কে? কে আছে পাশে?
শুধু একলা মা, বুকে জড়িয়ে ধরে।

আকাশে বাতাসে পূজোর গন্ধ,
একটু দূরেই বাজে ঢাকের তান,
আর এদিকে বদ্ধ ঘরে নেমে আসে
নিস্তব্ধ এক বিভীষিকার সন্ধ্যান।

গতকালই তো বেরিয়েছিলো—
মায়ের জন্য সেরা শাড়ি কিনবে বলে,
নিজের টিউশনির জমানো টাকায়
স্বপ্ন বুনেছিলো হৃদয়তলে।

কিন্তু, শহরের গলিঘুঁজির আঁধারে
ওৎ পেতে ছিলো পিশাচ তিনটি!
মানবের মুখোশ পরা জানোয়ার,
যাদের চেহারা চেনা-জানা সবার!

ঝাঁপিয়ে পড়লো হায়েনার মতো,
ছিঁড়েখুঁড়ে নিলো সতীত্ব তার,
মাটিতে লুটিয়ে পড়লো শাড়ির ব্যাগ,
নগ্ন শরীর আজ নীরব প্রতিবাদ।

সে দেখলো…
যারা পূজোর কর্তা, যারা চাঁদা তোলে,
যারা ন্যায়ের বুলি আউড়ে চলে,
তারাই আজ কামনার আগুন জ্বেলে,
চুষে খেলো শরীরের রক্তশীষ!

দেশে আইন আছে, শাসনও আছে,
তবে সেগুলো কাদের জন্য?
গরিবের জন্য ন্যায়— শুধু এক গল্প,
আর ধনীদের জন্য ছাড়পত্র!

সংবিধান মোড়া মোটা টাকার চাদরে,
নিপীড়কের হাতেই ন্যায়বিচার বন্দী,
বিচারের আশায় দিন যায়, রাত যায়,
আর কাগজের ফাইলগুলো শুধু ধুলোয় মলিন হয়।

তাই তো ধর্ষিতা রয়ে যায় পতিতার তকমায়,
আর ধর্ষক থেকে যায় ধর্ষণ করেই খালাস!
ডেটের পর ডেট আসে, তারিখ বদলায়,
বিচারের ফাইল একদিন কেবল লুপ্ত হয়!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *