হিন্দু দেবদেবীর কথা হিন্দু পুরাণ

কল্পতরুর আসল রহস্য কি আপনি জানেন? কেন পালন করা হয় কল্পতরু উৎসব? Kalpataru Utsav Celebration

পয়লা জানুয়ারি প্রথম কল্পতরু উৎসব শুরু হয়েছিল। এই উৎসব রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের উদ্দেশ্যে পালিত হয়। বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব পালিত হলেও মূলত দমদম এর কাশীপুরের উদ্যানবাটিতে অর্থাৎ যেটি বর্তমানে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের শাখা কেন্দ্র, সেখানে এই উৎসব পালিত হয়। আপনি কি জানেন, কেন এই উৎসবকে কল্পতরু উৎসব বলা হয়? 

আজ আমরা জানতে চলেছি আজকের ভিডিও’র মাধ্যমে। কমেন্ট বক্সে অবশ্যই লিখবেন হরে কৃষ্ণ। এরই সাথে হিন্দু পুরাণ অফিসিয়াল চ্যানেলটিকে সাবস্ক্রাইব করে পাশে থাকুন।

রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের উৎসবকে কল্পতরু উৎসব বলে অভিহিত করা হয়। কিন্তু এই উৎসবকে কেন কল্পতরু বলা হয়, তা জানতে হলে হরিবংশ পুরাণ সম্পর্কে  জানতে হবে। হরিবংশ পুরাণে উল্লেখ রয়েছে এই বৃক্ষের কথা। বলা হয়, দেবতা ও অসুরদের সমুদ্র মন্থনের সময় একটি বৃক্ষের সৃষ্টি হয়, যা অমৃত, লক্ষী দেবী, ঐরাবত হাতি ইত্যাদির সঙ্গে সমুদ্র মন্থনের সময় সৃষ্টি হয়ে ছিলো। সমুদ্রমন্থন দ্বারা উৎপন্ন বৃক্ষটি পারিজাত বৃক্ষ। পরবর্তীকালে দেবরাজ ইন্দ্রর নন্দন কাননে এই পারিজাত বৃক্ষ স্থান পায়। শ্রীকৃষ্ণের স্ত্রী সত্যভামার আবদানে শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে নিয়ে এসেছিলে এই বৃক্ষকে। এই বৃক্ষকে কল্পতরু বলা হয় কারণ এই বৃক্ষের কাছে যা চাওয়া হয় তাই পাওয়া যায়। কল্পতরু উৎসবের দিন ঠাকুরের ভক্তরা তাকে ঈশ্বরের অবতার রূপে মনে করেন এবং এই দিন সমস্ত ভক্তদের মনোবাঞ্ছা ঠাকুরের কৃপায় পূরণ হয়েছিল। ভক্তদের বিশ্বাস এই দিন শ্রী রামকৃষ্ণ দেব সকলের মনের ইচ্ছে পূরণ করেন। তাই এই উৎসবকে কল্পতরু উৎসব বলা হয়।

এই উৎসব যখন শুরু হয়েছিল তখন শ্রী রামকৃষ্ণ দেব নিজে থাকতেন এই উদ্যানবাটিতে। তিনি নিজেই তখন ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত ছিলেন। একদিন বিকেলে তিনি নিচে নেমে এই উদ্যানবাটির বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। তার সঙ্গে ছিল তার কিছু গৃহী ভক্ত। প্রায় ৩০ জন গৃহী ভক্ত ছিল, তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিখ্যাত নাট্য ব্যক্তিত্ব গিরিশচন্দ্র ঘোষ।

এই সময় শ্রী রামকৃষ্ণদেব তাকে জিজ্ঞেস করেন যে তিনি ঠাকুরকে কী বোঝেন? গিরিশচন্দ্র ঘোষ সেসময় হাতজোড় করে বললেন, যে ঠাকুর নর রূপ ধারী পূর্ণব্রহ্ম ভগবান, যিনি পাপীতাপি দের মুক্তির উদ্দেশ্যে এই পৃথিবীতে নেমে এসেছেন। গিরিশ ঘোষের কথা শোনার পরই শ্রী রামকৃষ্ণদেব ভাব সমাধিতে চলে যান এবং তার গৃহী ভক্তদের আশীর্বাদ করেন তোমাদের সকলের চৈতন্য হোক বলে।

শ্রী রামকৃষ্ণদেব তার ভক্তদের বলতেন ভগবানের কাছে খুব সাবধানে চাইতে হয়। কারণ ঈশ্বর ভালো চাইলে ভালো দেন খারাপ চাইলে খারাপই দেন। তাই চাওয়ার সময় খুব সাবধানে চাওয়া উচিত। ঠাকুর ভক্তদের অর্থ যশ খ্যাতি দিয়ে আশীর্বাদ করেননি। ঠাকুর চেয়েছিলেন তার ভক্তদের চৈতন্য হোক অর্থাৎ তারা সঠিক রাস্তায় থেকে ভগবানের সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করুক ও সঠিক পথে প্রার্থনা জানাক ঈশ্বরের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *